ভিটামিন ‘এ’র অভাবে শিশু মৃত্যুর হার বাড়ে ২৪ শতাংশ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ৬:২৬ পিএম, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৩
  • শেয়ার করুন

ভিটামিন“এ”র অভাবে শিশুদের ২৪ শতাংশ মৃত্যুর হার বেড়ে যায় বলে জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। আজ সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মহাখালীতে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব প্রিভেনটিভ অ্যান্ড সোশাল মেডিসিন (নিমসম) অডিটোরিয়াম ‘জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৪ সাল থেকে দেশে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর আয়োজন শুরু হয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময়ে। তখন দেশে রাতকানা রোগীর সংখ্যা ছিল ৪ শতাংশের বেশি। তখন অনেক ছেলে-মেয়েদের রাতকানা রোগী হিসেবে দেখা যেত। অনেক শিশু পোলিওতেও আক্রান্ত হতো। মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর মাধ্যমে রাতকানা রোগ নাই বললেই চলে।

জাহিদ মালেক বলেন, আমরা চাই শিশুরা ভালোভাবে বেড়ে উঠুক, দেশের সুনাগরিক হোক। সোনার বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের সোনার মানুষ দরকার, সোনার শিশু দরকার। শিশুরা এ দেশের ভবিষ্যৎ, তারাই দেশকে পরিচালিত করবে। শিশুদের খাদ্য পুষ্টি এবং ভিটামিনের অভাব হলে অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। যার মধ্যে একটি হচ্ছে রাতকানা রোগ।

এ ছাড়া দৈহিক এবং মানসিকভাবেও তারা বেড়ে উঠতে পারে না। তাদের লেখাপড়ায় মনোযোগও কম হয়। তিনি আরও বলেন, ভিটামিন এ’র অভাবে শিশুদের ২৪ শতাংশ মৃত্যুর হার বেড়ে যায়। পুষ্টির অভাবে শিশুরা খর্বাকৃতির হয়। আমাদের দেশে প্রায় ৫০ শতাংশ শিশু খর্বাকৃতির ছিল, সেটা এখন অনেক কমে গেছে। ভিটামিন এ’র অভাবে শিশুদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। যার ফলে শিশুরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। যেমন হাম, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে যায়। এতে শিশুদের মৃত্যু ঝুঁকিও বেড়ে যায়।

এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মায়েদের তাদের সন্তানদেরকে ভিটামিন এ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানোর জন্য আহ্বান জানান। সোমবার দিনব্যাপী এ কার্যক্রম চলবে। ৬-১১ মাস বয়সী ২৫ লাখ, ১২-৫৯ মাস বয়সী এক কোটি ৯৫ লাখসহ মোট দুই কোটি ২০ লাখ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ২০১০ সাল থেকে নিয়মিতভাবে বছরে দুবার ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো অব্যাহত রেখেছে।

এসময়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. টিটো মিয়া প্রমুখ।

তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে জেলা, সিটি কর্পোরেশন ও মাঠ পর্যায়ে ভিটামিন এ ক্যাপসুল পাঠানো হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি টিভি ও রেডিও এবং জাতীয় দৈনিক পত্রিকা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সব ইমামকে মসজিদে এবং হিন্দু খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের মাধ্যমে সমস্ত হিন্দু পুরোহিতদের মন্দিরে ৬-৫৯ মাস বয়সী সব শিশুকে ভিটামিন এ খাওয়ানোর হচ্ছে। মন্ত্রীবলেন, লাল রঙের ক্যাসপুল আছে ২ লাখ আইইউ, যার মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ ২০২৪ সালের জুন। আর নীল রঙের ক্যাপসুল আছে ১ লাখ আইইউ, যার মেয়াদ আছে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।