মানুষকে শান্তিতে থাকতে দিন, লড়াই আমার সঙ্গে করুন: এমপি মাশরাফী

প্রকাশিত: ১০:২৩ পিএম, জুলাই ১৭, ২০২২
  • শেয়ার করুন

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া পোস্টে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি ও মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হয়েছে দাবি করে দাঙ্গা ঘটানোর অভিযোগ এনে সালাহ উদ্দিন কচি বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় আকাশ সাহাকে অভিযুক্ত করে শনিবার (১৬ জুলাই) রাতে মামলা দায়ের করেন।

পরে পুলিশ শনিবার রাত সাড়ে ১১টায় অভিযুক্ত আকাশ সাহাকে খুলনার ডুমুরিয়া থেকে গ্রেপ্তার করলে রোববার (১৭ জুলাই) নড়াইল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক মো. মোরশেদুল আলম রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

নড়াইলের ঘটনা নিয়ে সেখানের সংসদ সদস্য ও জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফী বিন মুর্তজা গতকাল একটি স্ট্যাটাস দেন। যেখানে তিনি স্থানীয় মানুষকে শান্ত থাকার জন্য বলেন। আজ মাশরাফী আরও একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক আইডিতে। পাঠকদের জন্য তার স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

একটু বোঝার চেষ্টা করছি, আর কত দিক থেকে আক্রমণ হতে পারে। প্রথম আক্রমণের কথা হয়তো সবাই ভুলে গেছে, তাই মনে করিয়ে দিচ্ছি। প্রথম ঝামেলা করলো তারা মাওলানা মামুনুলকে (মামুনুল হক) নিয়ে। তাকে যখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিষেধাজ্ঞা দিলো, তখন ওয়াজ করার জন্য তাকে নড়াইলে আনা হলো। কথা হলো, যখন ওয়াজ মাহফিল হয়, সেটার পারমিশন দিয়ে থাকেন ডিসি, নিরাপত্তার ব্যাপার দেখেন এসপি। এখানে এমপিদের কোনো কাজই নাই।

কিন্তু ডিসি বা এসপি থেকে আমাকে বিন্দুমাত্র না জানিয়ে ওয়াজ মাহফিল দেওয়া হলো নোয়াগ্রামে, যেখানে আমার শ্বশুরবাড়ি। তাকে আগেই বলা হলো যে ওয়াজ মাহফিলের অনুমতি নেওয়া আছে, আপনি চলে আসেন। অথচ কালনাঘাট পর্যন্ত আনার পর তবেই কেবল ডিসিকে জানালো, এসপিকে জানালো। ঘাট থেকে যখন তাকে বলা হলো যে, ‘আপনার চিঠি কোথায়?’ সে দিতে পারলো না। মাহফিল কর্তৃপক্ষ তখন আমাকে ফোন করে বললো, ‘আপনি সমস্যা ঠিক করেন।’ কথা হলো, তখন এই সমস্যার সমাধান করা কীভাবে সম্ভব? এটা তো পুরোটাই একটা প্রক্রিয়া, যা আরও সাতদিন আগে থেকে করতে হয়!

তখন ওই লোকগুলো বলা শুরু করে দিলো, আমি নাকি ওয়াজ মাহফিল হতে দিচ্ছি না। পুরো খেলাটা খেলেছে এমনভাবে, তাকে আমার শ্বশুরবাড়ি এলাকায় এনে সরকারের কাছে প্রমাণ করতে চেয়েছে যে, আমি মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মানছি না। আর যদি না আসতে পারে, তাহলে প্রচার করা হবে যে, মাশরাফি ওয়াজ করতে দেয় না। দুদিক থেকেই তাদের জয়। আর দুই পক্ষের কাছেই আমাকে খারাপ বানাবে।

তবে যাই হোক, আল্লাহ মালিক, সত্য আর চাপা থাকেনি। সবাই কম-বেশি জেনেছে সত্যিটা, আর যারা জানে না, তারা ভুল বুঝেই আছে।

এবার উল্টো খেলা খেললো তারা। সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষদের ওপর আক্রমণ করে তাদের বিপদে ফেলা, পাশাপাশি আমাকেও বিপদে ঠেলে দেওয়া। এমনকি, কিছুদিন আগে কালিয়ার মির্জাপুরে সম্মানিত একজন শিক্ষককে অপমানের ঘটনায়ও আমাকে জড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে, অথচ ওটা আমার আসনের ভেতর নয়।

যাক, আপনারা সব তো করলেন। এবার আপনাদের কাছে একটা অনুরোধ, পেছন থেকে আঘাত করতে করতে আপনারা ক্লান্ত হয়ে যাবেন। তো আসুন, সামনে থেকে আঘাত করুন। আমার সঙ্গে সরাসরি লড়াই করুন। আমি সাধুবাদ জানাবো।

কিন্তু আমাকে ভোগানোর জন্য দয়া করে সাধারণ ও অসহায় মানুষের আর ক্ষতি করবেন না। মানুষকে শান্তিতে থাকতে দিন, লড়াই আমার সঙ্গে করুন। আমি জানি, নড়াইলে রাজনীতি যাদের কাছে পেশা, তাদের কাছে আমি এখন নেশা…।