নগরীতে ‘হ্যান্ড ওয়াশিং অন হুইলস’ উদ্বোধন করলেন মন্ত্রী তাজুল

প্রকাশিত: ১২:০৪ পিএম, ডিসেম্বর ১৩, ২০২০
  • শেয়ার করুন

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে এবং জনসাধারণকে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার সহায়তায় ঢাকায় চালু হয়েছে এক উদ্ভাবনী ইউনিট- ‘হ্যান্ড ওয়াশিং অন হুইলস’।

ওয়াসা এবং ওয়াটারএইডের যৌথ উদ্যোগে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের (এলজিআরডি) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম হ্যান্ড ওয়াশিং অন হুইলসের ১০টি ইউনিট উদ্বোধন করেন।

‘হ্যান্ড ওয়াশিং অন হুইলস’- ওয়াটারএইডের এ উদ্যোগের সহযোগী হিসেবে রয়েছে সুইডিশ দূতাবাস এবং ঢাকা ওয়াসা। ইউনিটগুলোর মাধ্যমে জনসাধারণের হাত ধোঁয়াকে সহজ করে তুলতে প্রতিটি ইউনিটের জন্য পানি সরবরাহ করবে ঢাকা ওয়াসা।

কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাসে সবার হাত ধোয়ার জন্য ইউনিটগুলোতে আছে একাধিক ব্যবহারবান্ধব সিঙ্ক, লিক্যুইড সাবান এবং পানির ট্যাঙ্ক। হাত ধুতে উৎসাহ প্রদানে এবং এ সংশ্লিষ্ট সচেতনতা বৃদ্ধিতে ইউনিটগুলো ডিজিটাল ট্যাব রয়েছে।

রাজধানীজুড়ে ১০টি ‘হ্যান্ড ওয়াশিং অন হুইলস’ ইউনিট জীবন রক্ষায় সচেতনতার বার্তা প্রচার করবে এবং এটি জনসাধারণের জন্য বিনামূল্যে হাত ধোয়ার প্রয়োজনীয় সুবিধাদি সরবরাহ করবে।

এই ক্যাম্পেইনের মূল লক্ষ্য ভাসমান জনগণ, পথচারী, রিকশাচালক ও গণপরিবহনের চালকদের মাঝে সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দেয়া এবং তাদের জন্য হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি এলজিআরডি মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘হাত ধোয়া গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে হাত ধোয়াকে অধিকতর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কারণ, কোভিড-১৯ ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে হলে সঠিক নিয়মে হাত ধুতে হবে। কোভিড-১৯ বিস্তাররোধে আমাদের সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

সরকারের পাশাপাশি, এই ভাইরাস মোকাবিলায় দাতা সংস্থাসহ বেসরকারি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোও কাজ করে যাচ্ছে, যা নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে জনসাধারণকে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার বিষয়ে উৎসাহিত করতে ওয়াটারএইড, সুইডিশ দূতাবাস ও ঢাকা ওয়াসার এই যৌথ উদ্যোগটি বর্তমান পরিস্থিতিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।’

উদ্বোধনের দিন সজীব বকর নামের কারওয়ান বাজারের এক স্থানীয় ফুড কার্ট বিক্রেতা জানান, তিনি রাস্তায় খাবার প্রস্তুত করেন এবং হাত পরিষ্কার রাখার জন্য এখানে হাত ধোয়ার তেমন একটা সুবিধা ছিল না। এই উদ্যোগের ফলে এখন তিনি আনন্দের সঙ্গে কোনো প্রকার দুশ্চিন্তা ছাড়াই পথচারীদের খাবার পরিবেশন করতে পারবেন।

এ নিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, ‘করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে দু’টি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটি হলো বাসার বাইরে বের হলে মাস্ক পরা ও অন্যটি হলো সঠিক নিয়মে হাত ধোয়া। চলমান বৈশ্বিক মহামারিতে জনসাধারণের হাত ধোয়াকে সহজ করে তুলতে ওয়াটারএইড, ঢাকা ওয়াসা ও সুইডিশ দূতাবাসের সমন্বিত এ উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই।’

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান বলেন, ‘কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারি চলাকালীন জনসাধারণের সুবিধার জন্য আমরা পাঁচটি কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলাম। এর মধ্যে অন্যতম ছিল রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় হাত ধোয়ার পানি সরবরাহের বিষয়টি নিশ্চিত করা। ওয়াটারএইড, সুইডিশ দূতাবাস ও ঢাকা ওয়াসার এ উদ্যোগটি জনসাধারণের হাত ধোয়াকে সহজ করে তুলবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।’

ওয়াটারএইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, হাত ধোয়া কোভিড-১৯ এর বিস্তার এড়ানোর প্রতিরক্ষায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি এবং প্রাথমিক পদক্ষেপ। কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ডেউ চলাকালীন হাত ধোয়ার গুরুত্ব আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে।

‘হ্যান্ড ওয়াশিং অন হুইলস’ এমন একটি উদ্ভাবন যা ঢাকার রাস্তায় চলাচলকারী ব্যক্তিদের হাত ধোয়ার সহজ সুযোগ করে দেবে এবং এ ইউনিট হাতের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই ইউনিটগুলো ডিজাইন করা হয়েছে।

ইউনিটগুলি রাজধানীর সর্বাধিক জনবহুল এলাকায় চলবে। যার মধ্যে রয়েছে: গুলশান, যাত্রাবাড়ী, মহাখালী, গাবতলী, নিউ মার্কেট, কারওয়ান বাজার ওয়াসা ভবন, গুলিস্তান, ফার্মগেট, উত্তরা এবং মালিবাগ।