দেশীয় উদ্যোক্তাদের ব্লু -ইকোনমি নিয়ে কাজ করার প্রস্তুতি নিতে হবেঃ নৌ প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশিত: ৩:৪১ পিএম, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২০
  • শেয়ার করুন

নিরাপদ ও সাশ্রয়ী নৌপথ নিশ্চিত করতে নৌ-সংশ্লিষ্ট সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) মতিঝিলে বিআইডব্লিউটিএ ভবনে ‘বিশ্ব নৌদিবস’ উপলক্ষে আলোচনা সভায় অনলাইনে অংশ নিয়ে এ আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সমুদ্রসীমাবেষ্টিত হওয়ায় সুনীল অর্থনীতির (ব্লু ইকোনমি) অপার সম্ভাবনা ও ভূরাজনৈতিক অবস্থান বিবেচনায় বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। নৌপথ ও সমুদ্র অর্থনীতি আমাদের অন্যতম শক্তিশালী উৎস হিসেবে অচিরেই আত্মপ্রকাশ করবে। সুনীল অর্থনীতি পরিপূর্ণ বাস্তবায়নে আমাদের কিছু কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে একটি সবল নীতি কাঠামো গঠন করা প্রয়োজন। এই কাজ সম্পাদনের জন্য স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করে পরবর্তী প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, সুনীল অর্থনীতির উন্নয়নে বিনিয়োগের বেশিরভাগই আসতে হবে বেসরকারি খাত থেকে। সুনীল অর্থনীতিতে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য যথোপযুক্ত প্রণোদনা ও নিয়ন্ত্রণমূলক নীতিমালা গ্রহণ করা হবে। নতুন জ্ঞান, প্রযুক্তি ও বিনিয়োগ আনার জন্য সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের ভূমিকা বিস্তৃত করা হবে। দেশীয় উদ্যোক্তাদের ব্লু -ইকোনমি নিয়ে কাজ করার প্রস্তুতি নিতে হবে।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, নৌযান মালিক ও শ্রমিকদের পারস্পরিক বোঝাপড়া বৃদ্ধি, দক্ষ ও চৌকস নাবিক তৈরি করতে নৌ-শিক্ষার আধুনিকায়ন, নদী দূষণ ও দখল করা থেকে বিরত থাকা ও রাখা নিশ্চিত করতে হবে। নৌপথকে আরো জনপ্রিয়, আরামপ্রদ ও সাশ্রয়ী করতে পারলে সড়ক ব্যবস্থার উত্তম বিকল্প হিসাবে নৌপথ বিশেষ গুরুত্ব পাবে। নৌপথে আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসাবে নৌপরিবহন অধিদপ্তরকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।

নৌপরিবহন অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) যৌথভাবে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। ‘টেকসই নৌপরিবহন টেকসই বিশ্ব’ স্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও বিশ্ব নৌ সংস্থা ঘোষিত ‘বিশ্ব নৌদিবস’ পালিত হচ্ছে বলে জানায় নৌ মন্ত্রণালয়।

নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর এ জেড এম জালাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম মোবাইলে ফোনে বক্তব্য রাখেন।

এছাড়া নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী এবং বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক বক্তব্য রাখেন।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা নির্বাচনী ইশতেহারের আলোকে নৌখাতের উন্নয়নের ওপর সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করেন; যার ধারাবাহিকতা এখনও চলমান রয়েছে। নদী খননের উদ্দেশ্যে গত ১০ বছরে বিআইডব্লিউটিএ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের জন্য আমদানি করা হয়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ড্রেজার এবং সহায়ক জলযানসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম। এসব ড্রেজারের সাহায্যে নদী খনন ও পলি অপসারণ কাজ অব্যাহত রয়েছে।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দেশেই উচ্চতর মেরিটাইম শিক্ষা নিশ্চিত করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে যুগোপযোগী পাঠক্রমের মাধ্যমে আমরা আন্তর্জাতিক মানের নাবিক ও নৌ সংশ্লিষ্ট দক্ষ জনবল পাওয়া যাবে।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামের মেরিন একাডেমির পাশাপাশি দেশের সিলেট, বরিশাল, পাবনা এবং রংপুর— এই ৪টি অঞ্চলে আরো ৪টি মেরিন একাডেমি কার্যক্রম শুরু হয়েছে, যার মাধ্যমে নৌ খাতে আরো দক্ষ জনবল বৃদ্ধি পাবে।