সবুজ-সোনার বাংলাদেশ গড়তে বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ

প্রকাশিত: ৯:৪৮ পিএম, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২০
  • শেয়ার করুন

পরিবেশ, বন জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, বর্তমান সরকার বায়ুমণ্ডলের ওজন স্তর সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলা, জীববৈচিত্র সংরক্ষণসহ সার্বিক পরিবেশ সুরক্ষা কার্যক্রমে সফল হতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। সমাজের সকল স্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে একটি সবুজ ও সোনার বাংলাদেশ গড়তে বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ।

বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) আগারগাঁওস্থ পরিবেশ অধিদপ্তরের অডিটরিয়ামে ‘প্রাণ বাঁচাতে ওজন: ওজন স্তর সুরক্ষার ৩৫ বছর’ প্রতিপাদ্য ধারণ করে বিশ্ব ওজন দিবস ২০২০ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান, এনডিসির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, এমপি অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) মাহমুদ হাসান, অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) মো. মিজানুল হক চৌধুরী, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. এ. কে. এম. রফিক আহাম্মদ এবং ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি প্রমুখ।

পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, ওজন স্তর রক্ষায় ১৯৮৫ সালের ২২ মার্চ গৃহীত ভিয়েনা কনভেনশন ও ১৯৮৭ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর গৃহীত মন্ট্রিল প্রটোকল অনেক সাফল্যে গাথা। ১৯৯০ সালে এ দুটিতে স্বাক্ষরের পর গৃহীত কার্যক্রমের কারণে বিশ্ববাসীর সঙ্গে বাংলাদেশও এই সাফল্যের অংশীদার। প্রটোকল অনুযায়ী বাংলাদেশে অন্যতম ওজন স্তর ক্ষয়কারী দ্রব্য সিএফসি, হ্যালন, কার্বনটেট্রাক্লোরাইড, মিথাইল ক্লোরোফরম ও মিথাইল ব্রোমাইডের ব্যবহার বিগত ১ জানুয়ারি ২০১০ সালে রোধ করা হয়েছে। এছাড়া ২০১২ সালে ওষুধ শিল্পে ব্যবহৃত অবিশিষ্ট সিএফসির ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা হয়েছে। অত্যন্ত আনন্দের বিষয়, বাংলাদেশ মন্ট্রিল প্রটোকল বাস্তবায়নের সব কয়টি ধাপ যথাসময়ে সঠিকভাবে অতিক্রম করেছে এবং প্রটোকলের বাধ্যবাধকতা পালনের ক্ষেত্রে সচেষ্ট রয়েছে। ওজন স্তর সংরক্ষণ ও সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি হতে প্রাণ-মণ্ডল রক্ষায় বিগত ৩৫ বছর পৃথিবীর সকল দেশ যে ভূমিকা রেখেছে তার সমন্বিত ফলশ্রুতিতেই আজ ওজন স্তর অনেকটাই সুরক্ষিত।

পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে মন্ট্রিল প্রটোকলের আওতায় হাইড্রোক্লোরোফ্লোরোকার্বন (এইচসিএফসি) ফেজ আউট করার কাজ চলছে, যা এয়ারকন্ডিশনার, অগ্নি নির্বাপন ও ফোম সেক্টরে ব্যবহৃত হয়। মন্ট্রিল প্রটোকল সংশোধন করে এগুলোর ফেজ আউট সিডিউল ১০ বছর এগিয়ে আনা হয়েছে। উক্ত এইচসিএফসির ফেজ আউটের লক্ষ্যে আমরা এইচসিএফসি ফেজ আউট ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান তৈরি করেছি। এইচসিএফসি ফেজ আউটের জন্য এমন সব বিকল্প প্রযুক্তিকে উৎসাহিত করা হয়েছে, যা একই সঙ্গে ওজন স্তর এবং জলবায়ু বান্ধব হবে। এ ধরনেরই একটি বিকল্প প্রযুক্তি নিয়ে আমরা অনেকটাই সফলভাবে এগিয়েছি। শুধু ওজন স্তর রক্ষাকল্পেই নয়, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায়ও মন্ট্রিল প্রটোকল একইভাবে সাফল্য লাভ করবে। বাংলাদেশ বিগত ৮ জুন মন্ট্রিল প্রটোকলের কিগালি সংশোধনী অনুস্বাক্ষর করে তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

মন্ত্রী জানান, মন্ট্রিল প্রটোকল অত্যন্ত সফলভাবে বাস্তবায়নের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ এবং ২০১৭ সালে জাতিসংঘ পরিবেশ কর্তৃক বাংলাদেশ প্রশংসিত ও পুরস্কৃত হয়েছে। এছাড়া ওজন স্তর ক্ষয়কারী দ্রব্যের অবৈধ অনুপ্রবেশ ও আমদানি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ওয়ার্ল্ড কাস্টমস অরগানাইজেশন, জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি এবং ওজন সেক্রেটারিয়েট কর্তৃক এ বছর পরিবেশ অধিদপ্তর এবং ওজন সেলের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা শেখ ওবায়দুল্লাহ আল মাহমুদকে প্রশংসাসূচক মেডেল ও প্রশংসাপত্র প্রদান করা হয়। বিশ্ব ওজন দিবস ২০২০ উদযাপন উপলক্ষে পরিবেশ অধিদপ্তর গৃহীত নানা কর্মসূচিসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অন্যান্য সচেতনতামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে জনগণকে ওজন স্তরের গুরুত্ব ও তা রক্ষার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি অবহিত করা হবে।

সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. হুমায়ুন কবির, পরিচালক (বায়ুমান ব্যবস্থাপনা) মো. জিয়াউল হক এবং বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, ওয়ালটনসহ রেফ্রিজারেশন সেক্টরের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।