ফেসবুক-ইউটিউবকে নিয়ম-নীতির মধ্যে আনা প্রয়োজন: তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১০:০৮ পিএম, জুলাই ৫, ২০২০
  • শেয়ার করুন

ফেসবুক, ইউটিউবের ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম বা ওটিটি প্ল্যাটফর্মসহ সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে নিয়ম-নীতির মধ্যে আনা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, ‘ওটিটি প্ল্যাটফর্মের নানা কনটেন্ট নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এগুলো আনসেন্সরডভাবে সেখানে যাচ্ছে। সেজন্য এগুলোকে একটি নিয়ম-নীতির মধ্যে আনা প্রয়োজন৷’

আজ রবিবার (৫ জুলাই) সচিবালয়ে ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলোকে নিয়ম-নীতির মধ্যে আনা সংক্রান্ত এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার শুরুতে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান যুক্ত ছিলেন। এছাড়া সভায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব নূর-উর-রহমান, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক, বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ব্যবহার করায় বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা সার্ভিস প্রোভাইডার কোম্পানিগুলোর কাছে চলে যাচ্ছে। নেটফ্লিক্সের কাছে যাচ্ছে, ইউটিউবের কাছে যাচ্ছে এবং অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলে যাচ্ছে। এখান থেকে যেভাবে ট্যাক্স পাওয়ার কথা, আমরা সেভাবে পাচ্ছি না।’

‘শুরুতে পৃথিবীর অন্যান্য দেশে এ রকমই ছিল, অনেক দেশেই নিয়ম-নীতি প্রবর্তন করা হয়েছে। যেমন ভারতে ফেসবুক কোম্পানি হিসেবে রেজিস্টার্ড হয়েছে। বাংলাদেশে এখনো হয়নি। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ক্রমাগত প্রচেষ্টার পরিপ্রেক্ষিতে তারা এখানে একটি এখানে অফিস খোলা ও এজেন্ট নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু তারা এখনও কোম্পানি করেনি,’ যোগ করেন মন্ত্রী।

ফেসবুক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এসব বিষয়কে একটি নিয়ম-নীতির মধ্যে আনা প্রয়োজন। এটি এমন একটি মাধ্যম, যা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রতিটি মানুষের কাছে চলে যাচ্ছে। মানুষ এ মাধ্যমটি এখন বেশি ব্যবহার করছে। এ মাধ্যমটি ব্যবহারের মাধ্যমে সমাজ বিনির্মাণের যেমন সুযোগ আছে, সমাজকে অস্থিতিশীল করারও সুযোগ আছে।’

‘যারা নিয়ম-নীতি না মেনে, সরকারের কোনো বৈধ অনুমতি না নিয়ে এখানে ব্যবসা করছে, তাদের ট্যাক্সের আওতায় আনা প্রয়োজন। কেউ যদি অনুমতি না নিয়ে এতদিন ধরে ব্যবসা করে থাকে, সেজন্য তাদের ব্যাপারে কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে, সেগুলো আজ আমরা আলোচনা করব,’ বলেন তথ্যমন্ত্রী।

হাছান মাহমুদ আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের বাস্তবতায় আমরা যেটি দেখতে পাচ্ছি, সেটি হচ্ছে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বর্তমান যুগের একটি বাস্তবতা, এ প্লাটফর্ম ব্যবহার করে সেখানে বিনোদন থেকে শুরু করে নানা কিছু স্ট্রিমিং হচ্ছে। কিন্তু আমরা দেখতে পেয়েছি, এ নিয়ে নানা বিতর্ক তৈরি হচ্ছে।

এটি একটি ক্রমবর্ধমান ক্ষেত্র, এখানে হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হচ্ছে। ওটিটি প্লাটফর্মে দুই হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হওয়ার সুযোগ আছে। কিন্তু সরকার সেখান থেকে কোনো ট্যাক্স পাচ্ছে না।’

এ নিয়ে এরই মধ্যে গ্রামীণফোন ও রবির কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, কোন লাইসেন্সের বলে তারা ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সার্ভিস প্রোভাইডার হিসেবে অন্যদের কাছ থেকে কনটেন্ট নিয়ে লাইভ স্ট্রিমিং করছে? তারা কোন ধরনের অনুমতি নিয়ে এটা করছে? গ্রামীণফোন আমাদের যে উত্তর দিয়েছে, সেখানে সে ব্যাখ্যা সঠিকভাবে নেই। এ বিষয়গুলোকে ট্যাক্সেশনের আওতায় আনা দরকার।’