প্রবৃদ্ধিকে মানুষের জীবনের ঊর্ধ্বে স্থান দেওয়া সঠিক নয়ঃ এমপি বাদশা

প্রকাশিত: ১০:৫০ এএম, জুন ১৩, ২০২০
  • শেয়ার করুন

জাতীয় সংসদে সদ্য ঘোষিত ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। তিনি বলেছেন, প্রস্তাবিত এই বাজেটে স্বাস্থ্যখাতের নামে বরাদ্দ ও কৌশল কোনটিই স্পষ্ট হয়নি।

সংসদে বাজেট ঘোষণার পর পর্যালোচনা শেষে শুক্রবার (১২ জুন) সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক।

বাজেট প্রতিক্রিয়ায় ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, স্বাস্থ্যখাতে গবেষণার জন্য ১০০ কোটি টাকাও অপ্রতুল। এখন যখন কোভিড-১৯ মোকাবিলায় আরও হাসপাতাল প্রয়োজন, সেখানে বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোকে বসিয়ে রেখে এবং বেসরকারি খাতের মুনাফার কাছে ছেড়ে দিয়ে সেটা কি সম্ভব?

তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১১ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক গড়ে তুলেছিলেন। বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে সেগুলো বন্ধ করেছিল। পরে ক্ষমতায় এসে এই সরকার আবারও তা চালু করে। এই করোনাকালে কমিউনিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোকে স্বাস্থ্য সুরক্ষার হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তোলা দরকার।

বাজেটে স্বাস্থ্য, কৃষি, শিল্প ও কর্মসংস্থানকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাঠামোগত পরিবর্তন আনা হলেও, অর্থমন্ত্রীর বাজেট প্রস্তাবনা এখনও প্রবৃদ্ধি কেন্দ্রিক বলে উল্লেখ করেন ফজলে হোসেন বাদশা।

তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যেই চলতি বছরের প্রবৃদ্ধির হিসাব ৫ দশমিক ২ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। কিন্তু করোনা আক্রান্ত দেশ ও বিশ্বের অর্থনীতির নীতির পরিস্থিতিতে ৮ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি কতখানি বাস্তবসম্মত তা ভেবে দেখা প্রয়োজন।

এসময় ফজলে হোসেন বাদশা আরও বলেন, উন্নয়ন বিলম্ব করা যায়, কিন্তু জীবন এক লহমার জন্য থেমে থাকতে পারে না। প্রবৃদ্ধিকে মানুষের জীবনের ঊর্ধ্বে স্থান দেওয়া সঠিক নয়। বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি পেলেও এর ৩৫ ভাগ চলে যায় সরকারি কর্মচারীদের পেনশনে। চলতি বছরে বাজেটে ব্যাংকিংখাত সংস্কার, সার্বজনীন পেনশন স্কিমের যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল, এবারের বাজেটে তা অনুপস্থিত। প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনা প্যাকেজসমূহ যেখানে ব্যাংকিংখাতের মাধ্যমেই বাস্তবায়ন করা হবে, তখন এই ভঙ্গুর ব্যাংকিংখাত টিকিয়ে রেখে সেটা কীভাবে সম্ভব, প্রশ্ন রাখেন বাদশা।

তিনি দেশের কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান ক্রয়ের পরিমাণ বাড়ানো এবং যান্ত্রিকীকরণের ক্ষেত্রে সমবায়ী মালিকানা প্রবর্তনের কথা বলেন। বাদশা বলেন, বাজেটের রাজস্ব আহরণ প্রস্তাবনা নিয়ে পরবর্তীতে বিস্তারিত বলা যাবে। তবে এখনও বাজেটে অপ্রত্যক্ষ করই প্রধান যা সাধারণ মানুষকে আঘাত করে।

তিনি এবারের বাজেটে সম্পদ ও মুনাফার ওপর করারোপ না করায় বিস্ময় প্রকাশ করেন। এভাবে আর কতদিন ধনীদের ছাড় দেওয়া হবে সেই প্রশ্নও তোলেন।