মালয়েশিয়ায় বন্ধ শ্রমবাজার নিয়ে ‘সর্বনাশের খেলা’ চলছে : এমপি ইসরাফিল আলম

প্রকাশিত: ৫:৫৯ পিএম, নভেম্বর ৮, ২০১৯
  • শেয়ার করুন

ওমর ফারুক, নওগাঁ -০৬(আত্রাই-রাণীনগর) প্রতিনিধিঃ-মালয়েশিয়ায় বন্ধ শ্রমবাজার খোলার নামে সর্বনাশের খেলা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম। পাশাপাশি এই খেলা বন্ধ করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপও কামনা করেছেন তিনি।

স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এ মন্তব্য করেন নওগাঁ-০৬(আত্রাই-রাণীনগর) এর সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ জাতীয় পল্লী উন্নয়ন সমবায় ফেডারেশনের নির্বাচিত সভাপতি মোঃ ইসরাফিল আলম এমপি। এমপি নিউজের পাঠকদের জন্য স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো…

‘দেশ ও জাতির স্বার্থের বিরুদ্ধে ব্যক্তি স্বার্থে অন্ধ হয়ে মানুষ কীভাবে নীতিহীন অবস্থায় দাঁড়িয়ে হাসে, তা আজ দেখলাম মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে সারা দিন এবং মধ্যরাত পর্যন্ত।

এখানকার বন্ধ শ্রমবাজার খোলার নামে যে সর্বনাশের খেলা আবার শুরু হয়েছে, তা বন্ধ করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি নজরদারি ও হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

স্বয়ং মা যদি সন্তানের হত্যাকারী হয়। আর রক্ষক যদি ভক্ষক হয়-তাহলে সেখানে প্রতিকার দেওয়ার আর পাওয়ার কিছুই বাকি থাকে না।

যে বিস্ময়কর আর অভাবনীয় ঘটনার সাক্ষী হয়ে থাকলাম, ভবিষ্যতে হয়তো তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে কোনো প্রবন্ধে বা গ্রন্থে লেখা হবে বিস্তারিতভাবে।

তবে আজ শুধু এটুকুই বলবো, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আর দেশরত্ন শেখ হাসিনার জন্ম না হলে এই অভাগা বাঙালি জাতির পরিণতি যে কি হতো তা একমাত্র তিনিই বলতে পারেন।

হে পাক পরওয়ারদেগার, তুমি সবই দেখছো এবং সবই জানো। দেশের গরীব মেহনতি মানুষের স্বার্থের বিরুদ্ধে যারা অন্ধ ও বিবেকহীন হয়ে অপতৎপরতা চালাচ্ছে, তাদের হাত থেকে বাংলাদেশ এবং বাঙালি জাতিকে তুমি রক্ষা করো। আমিন।’

এর আগে মালয়েশিয়ার বৈদেশিক শ্রমবাজার কবে খুলবে; শিগগিরই না দেরি হবে; যদি শিগগির খোলেও, পুরোপুরি খুলবে কিনা-এমন সব প্রশ্ন নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন দেশটির রাজধানী কুয়ালালামপুরে অবস্থানরত প্রতিনিধি দলের নেতা প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমেদ। তার বক্তব্যে উঠে আসে সিন্ডিকেট ইস্যুটি।

এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এখানে এসেছি শ্রমবাজার উন্মুক্ত করতে। সিন্ডিকেট থাকলে সমস্যা কোথায়? আমরা আপাতত এ নিয়ে ভাবছি না।’

আরও একটি প্রশ্নে বায়রার মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমানের চিঠির সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, ‘তারা কি সরকার যে, মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেবে।’

এরপর প্রত্যাশা ব্যক্ত করে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, ‘স্বল্পখরচ ও স্বচ্ছভাবে যেন বাংলাদেশের কর্মীরা আসতে পারে মালয়েশিয়ায়, আমরা সে ব্যবস্থাই করছি।’

প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমেদের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদল এখন মালয়েশিয়া সফর করছেন। প্রতিনিধি দলে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজা, অতিরিক্ত সচিব ড. আহমেদ মুনিরুস সালেহীন, যুগ্ম সচিব মো. ফজলুল করিম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক মো. আজিজুর রহমান এবং বিএমইটির পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম রয়েছেন।

উল্লেখ্য, মাহাথির মোহাম্মদ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর ২০১৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ থেকে কর্মী না নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে জি-টু-জি প্লাসের এসপিপিএ পদ্ধতির কার্যক্রম স্থগিত করে দেন।

এরপর প্রায় এক বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে অভিবাসন ব্যয় নিয়ন্ত্রণে ইতিমধ্যে জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটি বেশ কিছু সুপারিশ করেছে। বিষয়টি চূড়ান্ত করতে গত বুধবার ঢাকা ও কুয়ালালামপুরের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। ইতিমধ্যে দুদেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে কয়েক দফা বৈঠকও হয়েছে।

এর আগে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে বলা হয়েছে, তারা বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য তাদের শ্রমবাজার উন্মুক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।