ব্রাজিলে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন ৫ নারী মন্ত্রী

প্রকাশিত: ২:১৭ পিএম, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৩
  • শেয়ার করুন

মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ব্রাসিলিয়ার বাংলাদেশ হাউজে একটি আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ব্রাজিলের বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ইতিহাস, তাৎপর্য ও গুরুত্ব প্রচারের জন্য ব্রাজিল সরকারের নবগঠিত সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ব্রাসিলিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস একযোগে কাজ করছে।

আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি ব্রাজিলের অন্যতম প্রধান সাংস্কৃতিক উৎসব ‘রিও কার্নিভাল’ উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকায় ভাষা শহীদদের গৌরবগাথা ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ইতিহাসকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে আগেই শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানটি ব্রাসিলিয়ার বাংলাদেশ হাউজে আয়োজন করা হয়।

মাতৃভাষা সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের অবদানকে স্মরণ করে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে ব্রাজিলের নৃতাত্ত্বিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব বহনকারী মন্ত্রণালয়সমূহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ নারী মন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।

সংস্কৃতিমন্ত্রী মারগারেট মেনেজেস, ক্রীড়ামন্ত্রী আনা মোজের, পাবলিক সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট ও ইনোভেশন মন্ত্রী ইস্তার দ্যুরেখ, নারী নীতিবিষয়কমন্ত্রী সিডা গনসালভেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রী লুসিয়ানা সান্তোজ এবং ব্রাসিলিয়াতে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের নারী রাষ্ট্রদূতরা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তারা শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানান।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকা সংস্কৃতিমন্ত্রী মারগারেট মেনেজেস গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডের জন্য দুইবার মনোনয়ন পেয়েছিলেন। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই গায়িকা একজন সংস্কৃতিকর্মী হিসেবেও ব্রাজিলে ব্যাপক সমাদৃত।

রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুননেসা তার স্বাগত বক্তব্যে ভাষা আন্দোলনসহ স্বাধীনতা সংগ্রামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব ও অবদান তুলে ধরেন।

রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষার জন্য বাঙালির আত্মদান ও গৌরবোজ্জ্বল বিজয়গাথা সম্পর্কে জেনে আমন্ত্রিত অতিথিরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তারা বাংলাদেশের মানুষকে দৃঢ় প্রত্যয়ী ও সাহসী বলে আখ্যায়িত করেন।

অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিরা ক্যানভাসে তাদের প্রত্যেকের মাতৃভাষায় একটি করে শব্দ লিখেন যা পৃথিবীর সব মাতৃভাষা সংরক্ষণের প্রতি দায়িত্ববোধ ও ভালবাসার একটি প্রতীকী দেয়ালিকায় রূপান্তরিত হয়।

রাষ্ট্রদূত ফয়জুননেসা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের অন্যতম প্রধান প্রতিশ্রুতি হিসেবে নারীর ক্ষমতায়নকে কেন্দ্র করে গৃহীত সরকারি পদক্ষেপ ও এক্ষেত্রে সরকারের সাফল্য তুলে ধরেন।

তিনি দক্ষিণ এশিয়াতে নারীর ক্ষমতায়ন ও লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী টানা আট বছর ধরে বাংলাদেশের দক্ষিণ এশিয়াতে শীর্ষস্থান ধরে রাখা সম্পর্কে আলোকপাত করেন।

অনুষ্ঠানে নারীর ক্ষমতায়নে ব্রাজিল ও বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েও আলোচনা করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত নারী মন্ত্রীরা শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। সবাই নারীর ক্ষমতায়ন এবং ভাষা ও সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও বিকাশের ওপর গুরুত্ব দেন এবং বাংলাদেশের সঙ্গে এই লক্ষ্যে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

রাষ্ট্রদূত ফয়জুননেসা প্রধান অতিথি সংস্কৃতিমন্ত্রী মারগারেট মেনেজেসের সম্মানে বাঙালি ঐতিহ্যবাহী খাবারের সমন্বয়ে একটি নৈশভোজের আয়োজন করেন। ব্রাজিলের নবনির্বাচিত সরকার গঠনের মাত্র এক মাসের মধ্যে বাংলাদেশ দূতাবাসের এ আয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ মন্ত্রীর অংশগ্রহণ কূটনৈতিক সুসম্পর্ক রক্ষা ও বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রেখেছে।

ইতোমধ্যে ব্রাজিলের সর্বাধিক জনপ্রিয় দৈনিক ‘পোডার ৩৬০’ বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরে সংবাদ প্রকাশ করেছে