খালেদা জিয়া হচ্ছে সন্ত্রাসের গড মাদার: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ৯:৪০ পিএম, ডিসেম্বর ৪, ২০১৯
  • শেয়ার করুন

বিএনপি চেয়ারপারসনকে খালেদা জিয়াকে সন্ত্রাসের গড মাদার আখ্যায়িত করে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সন্ত্রাসের গড মাদারই হচ্ছে খালেদা জিয়া। সে এই বাংলা ভাই সৃষ্টি থেকে শুরু করে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা, ঠাণ্ডা মাথায় হরতাল অবরোধ ডেকে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে। এতিমের নামে টাকা এসেছে, সে টাকা সে চুরি করছে। আর সে মামলা দিয়েছে তারই প্রিয় ব্যক্তিরা, যারা ক্ষমতায় ছিল। তার বিরুদ্ধে গ্যাটকোর কেস, তার বিরুদ্ধে নাইকোর কেস।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে প্রায় তিন বছর পর অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় কমিটির বৈঠকে সূচনা বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। বৈঠকে বিগত তিন বছরে দলের বাজেট ও জাতীয় কাউন্সিলের বাজেট উপস্থাপন ও তা সর্বসম্মতিতে পাস করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়া পরিবারটাই খুনি পরিবার। ভোট চুরি, মানুষ হত্যা, আগুন দিয়ে পোড়ানো, এতিমের অর্থ আত্মসাত, দুর্নীতি, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় আইভী রহমানসহ মানুষ হত্যা অর্থাৎ জিয়া যেমন খুনি ছিল, খালেদা জিয়াও আরেক খুনি, তার ছেলেও খুনি। এই পরিবারটাই খুনের পরিবার। তারা মানুষ খুন, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাৎ করা ছাড়া আর কিছুই জানে না।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার জন্য অনেকের মায়াকান্না দেখি। খালেদা জিয়া যে মানুষকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা করলো এটা তারা ভুলে যায় কেন? মানুষকে কীভাবে তারা অত্যাচার করেছে সেটা ভুলে যায় কেন? তার হুকুমে কত মায়ের কোল খালি হয়েছে, কত বোন বিধবা হয়েছে, কত বোন আগুনে পুড়ে বিকৃত চেহারা হয়েছে। ছাত্র, ছাত্রী, শিক্ষক, আইনজীবি কেউ তো বাদ যায়নি। সে বীভৎস অবস্থাটা নিয়ে মানুষ বেঁচে আছে। তারপর এই দরদটা যারা দেখায়, তাদের আবার আগুনে পোড়া মানুষের চেহারাটা একটু দেখে আসা উচিত।

খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে পুরানো উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সে (খালেদা জিয়া) যখন ৯১ সালে সরকারে আসে, তখন আমেরিকায় তার নিক্যাপ রিপ্লেস করে, অপারেশন হয়। পরবর্তীতে আবার সৌদি আরবে করে। সে তো বিদেশে গিয়ে হুইল চেয়ারেই শপিং করতো। ফালু ঠেলত আর সে শপিং করত। সে যখন হজ করে সেখানেও ফালু হুইল চেয়ার ঠেলে, সে হজ করে। হুইল চেয়ারে বসা, সেটা তো নতুন কিছু না। সেটাতো বহুযুগ ধরে আমরা দেখে আসছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জেলে খালেদা জিয়া রাজার হালে আছে। পৃথীবির কোনো দেশে এই দৃষ্টান্ত কেউ দেখাতে পারবে যে, কোনো সাজাপ্রাপ্ত আসামির সেবার জন্য কাজের বুয়া যায়। সেটাও কিন্তু সে পাচ্ছে। মানুষ এমনি কাজের বুয়া পায় না। আর খালেদা জিয়ার জন্য জেলে স্বেচ্ছায় একজন কারাবরণ করেছেন, খালেদা জিয়ার সেবা করার জন্য। এতটুকু সুবিধা পর্যন্ত তাকে দেওয়া হচ্ছে, এটা হলো বাস্তবতা। আমাদের মধ্যে ওরকম কোনো প্রতিহিংসা পরায়ণতা নাই।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় কমিটির এই সভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সভা পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

প্রতিবছর জাতীয় কমিটির সভা করার কথা থাকলেও আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে প্রায় তিন বছর পর এই সভাটি অনুষ্ঠিত হল। সভায় আওয়ামী লীগের আয়-ব্যয়ের হিসাব অনুমোদন ছাড়াও আসন্ন কেন্দ্রীয় ত্রি-বার্ষিক জাতীয় সম্মেলনের সম্ভাব্য বাজেটেরও অনুমোদন নেয়া হয়।