প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।তিনি দেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এতথ্য জানানো হয়।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রজ্ঞাপনে সই করেছেন সচিব মো. গোলাম সারওয়ার।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী অবসরে যাচ্ছেন আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর। কিন্তু সে সময় সুপ্রিম কোর্টে অবকাশকালীন ছুটি থাকায়, গত ৩১ আগস্ট ছিল তার বিচারিক জীবনের শেষ কর্মদিবস।
হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর শপথগ্রহণের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতি পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। টানা ২০ মাস বিচারিক দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তার ৬৭ বছর পূর্ণ হবে ২৫ সেপ্টেম্বর। তাই সংবিধান অনুসারে ওইদিন তিনি অবসরে যাবেন।
নতুন নিয়োগ পাওয়া প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ১৯৮৬ সালে আইনজীবী হিসেবে জেলা বারের সনদ প্রাপ্ত হন। ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে এবং ২০০৫ সালে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। তিনি সহকারী এটর্নি জেনারেল এবং ডেপুটি এটর্নি জেনারেল হিসেবে ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে ৫ (পাঁচ) বছর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে ২০০৯ সালের ৩০ জুন যোগদান করেন এবং ২০১১ সালের ৬ জুন একই বিভাগে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন।
তিনি ২০১২ সালের ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর একজন সদস্য হিসেবে যোগদান করেন এবং ১৩ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে উক্ত ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হয়ে ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ কর্মরত থাকাকালীন তার সহকর্মী বিচারকদের সাথে ১১টি মামলার রায় প্রদান করেন। তিনি ২০২০ সালের ০৩ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন।
ওবায়দুল হাসান ১৯৫৯ সালের ১১ জানুয়ারি নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জ থানাধীন ছয়াশী (হাটনাইয়া) গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম আখলাকুল হোসাইন আহমেদ মায়ের নাম বেগম হোসনে আরা হোসাইন। তাঁর পিতা আখলাকুল হোসাইন আহমেদ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। তিনি গণপরিষদ সদস্য হিসেবে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের সংবিধান রচনায় সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং গণপরিষদ কর্তৃক গৃহীত সংবিধানে স্বাক্ষর করেন। তার অনুজ সাজ্জাদুল হাসান বর্তমানে নেত্রকোনা ৪আসনের সংসদ সদস্য।
ওবায়দুল হাসানের স্ত্রী নাফিসা বানু বর্তমানে বাংলাদেশ রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ পরিচালনা পরিষদের একজন সদস্য (ফিন্যান্স) হিসেবে কর্মরত আছেন। তাদের সন্তান ব্যারিস্টার আহমেদ শাফকাত হাসান। তিনি ইউনিভার্সিটি অব ডারহাম থেকে আন্তর্জাতিক আইনে এলএল.এম. ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
ওবায়দুল হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে বি.এস.এস.(অনার্স), এম.এস.এস.(অর্থনীতি), এলএল.বি. ডিগ্রি অর্জন করেন।
